একটু অবিশ্বাস্যই লাগবে বটে। কিন্তু সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খানের কাছে তালিম নিয়ে থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনী বিল গেটস ও তাঁর ১১ বছরের ছেলে ররি জন গেটস।
জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের ২০ লাখ ডলার মূল্যমানের পুরস্কার জিতেছে সালমানের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান খান একাডেমি— এ কথা আমরা সবাই জানি। সেই খান একাডেমির ভিডিও টিউটোরিয়াল ওয়েবসাইটটির নিয়মিত একজন পাঠক বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস। সাইটটিতে নিজের ছেলে ১১ বছর বয়সী ররি জন গেটসের জন্য বীজগণিত ও জীববিজ্ঞানের ভিডিও টিউটোরিয়াল নিয়মিত দেখেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে গেটস জানান, (সালমান) খান দারুণ এক যুবক, যাঁর তৈরি টিউটোরিয়ালের ওয়েবসাইটটি বেশ সমৃদ্ধিশালী। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়কে ছোট আকারে দারুণভাবে তুলে ধরার এ পদ্ধতি দেখে খুব অবাক হওয়ার কথাও জানান তিনি।
বিভিন্ন জায়গায় সালমানের এ ওয়েবসাইটের কথা বলেছেন তিনি। প্রায় দুই হাজার শ্রোতার উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে গেটস বলেন, সালমান খান অসাধারণ এক তরুণ উদ্যোক্তা। অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে মাত্র ১০-১৫ মিনিটের এসব ভিডিও টিউটোরিয়াল বেশ উপকারী। এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও দ্রুত এগিয়ে নিতে শিক্ষকদের এসব টিউটোরিয়াল বেশ কাজে লাগবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে মজার বিষয় হচ্ছে, যাঁকে নিয়ে বিশ্বের অন্যতম ধনী বিল গেটসের এ মন্তব্য, সে সালমানই এ কথা জানতেন না! ভিডিও দেখার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখে তাঁর ওয়েবসাইটের প্রতি গেটসের এমন প্রীতির কথা জানতে পারেন সালমান।
সাধারণভাবে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কোর্সের নিয়মাবলি অনুযায়ী প্রতিবছর পাঁচটি একাডেমিক কোর্স পরিচালনার ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গভাবে শেষ করতে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়ে যান শিক্ষকেরা। আর ঠিক উল্টোদিকে সালমান খানের তৈরি ছোট লেকচারের ভিডিও টিউটোরিয়ালগুলো বর্তমানে প্রতিদিন ৭০ হাজার বার দেখা হচ্ছে! অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষা কার্যক্রম অনেকটাই সহজ হয়েছে খান একাডেমির কল্যাণে। তাই এ কার্যক্রমকে এককথায় অসাধারণ বলে মন্তব্য করেছেন বিল গেটস।
ছেলেকে শেখানোর পাশাপাশি নিজেও এ সাইটের নিয়মিত ভক্ত গেটস সুযোগ পেলেই নিজেও কিছু শেখার জন্য সাইটটি দেখেন। এ নিয়ে গেটস মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটারে লিখেছেন, ‘সালমান খানের তৈরি খান একাডেমি ওয়েবসাইটটি অলনাইন শিক্ষার জন্য বেশ উপযোগী। আমি এর অনেকগুলো লেকচার দেখেছি এবং সুযোগ পেলেই দেখার চেষ্টা করি। পাশাপাশি বিভিন্নজনকে সাইটটি দেখার জন্য পরামর্শও দিই।’
- ১৩ অক্টোবর ২০১০ তারিখে প্রথম আলোতে প্রকাশিত